ঢাকা ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ৯ কার্তিক ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাব শুরু হলেও  জেলার ৫৪১টি আশ্রয়কেন্দ্রের অধিকাংশই ফাঁকা

ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাব শুরু হলেও  জেলার ৫৪১টি আশ্রয়কেন্দ্রের অধিকাংশই ফাঁকা

ঘূর্ণিঝড় দানা মোকাবিলায় বরিশাল জেলায় ৫৪১টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হলেও বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত অধিকাংশ ছিলো ফাঁকা। প্রতিটি আশ্রয়কেন্দ্রে ৫০০ করে মোট ২ লাখ ৭০ হাজার ৫০০ লোক আশ্রয় নিতে পারবে। স্থানীয়দের দাবি, অতীতে আবহাওয়া অফিসের ঘোষণা করা সময়ে ঘূর্ণিঝড় না হওয়ায় দিনের পর দিন আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করে দুর্ভোগে পরেছিলেন। তবে তাদের আশ্রয় কেন্দ্রে নিতে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) ৩২ হাজার, রেডক্রিসেন্টের ২০০ স্বেচ্ছাসেবকসহ সেনাবাহিনী। এদিকে ‘দানা’র প্রভাবে বরিশালে বৃহস্পতিবার দিনভর হয়েছে ঝড়োবৃষ্টি। এতে বরিশাল নগরীর প্রধান সড়ক থেকে অলিগলিসহ নি¤œাঞ্চলে জলাবদ্ধতা দেখা দেওয়ায় চরম দুর্ভোগে পরেছেন নগরবাসী।

টানা বৃষ্টির কারণে নগরীর সদর রোড, অক্সফোর্ড মিশন রোড, পলাশপুর, রসুলপুর, মোহাম্মদপুর, কাউনিয়া, প্যারারা রোড, রূপাতলী হাউজিং, কলেজ অ্যাভিনিউ, বটতলা এলাকাসহ নি¤œাঞ্চলগুলোতে জলাবদ্ধতা হয়েছে। পানি ঘরে উঠে যাওয়ায় চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন নি¤œাঞ্চলের বাসিন্দারা। এছাড়া সদর রোডসহ গুরুত্বপূর্ণ একাধিক সড়কে জলাবদ্ধতা দেখা দেওয়ায় চরম দুর্ভোগে পরেছেন পথচারীসহ জনসাধারণ।

বরিশাল নগরীর কলেজ অ্যাভিনিউ এলাকার বাসিন্দা এলবার্ট বল্লব রিপন বলেন, অল্প বৃষ্টি হলেই বাড়ির মধ্যে পানি চলে আসে। জলাবদ্ধতা এলাকার নিত্যদিনের ঘটনা। তাই স্থায়ীভাবে জলাবদ্ধতা দূর করতে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।

হিজলা উপজেলার বাসিন্দা আবদুল জব্বার বলেন, অতীতে আবহাওয়া অফিসের ঘোষিত সময় অনুযায়ী ঝড় হয়নি। তাই দিনের পর দিন গবাদী পশু, স্ত্রী-সন্তান নিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান করতে হয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগ হয়েছে। তাই দুর্ভোগ এড়াতে তিনি আশ্রয় কেন্দ্রে যাচ্ছেন না বলে জানান।

জেলা প্রশাসক দেলোয়ার হোসেন জানান, ৫৪১ আশ্রয়কেন্দ্রের বাইরেও ৭৯৮টি মাধ্যমিক, এক হাজার ৫৯০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া ত্রাণকাজ পরিচালনার জন্য ১২ লাখ ২৬ হাজার টাকা নগদ অর্থ, শিশু খাদ্যের জন্য ৫ লাখ ও গো খাদ্যের জন্য ৫ লাখ টাকা রয়েছে। মজুদ রাখা হয়েছে ৫৬৯ মেট্রিক টন চাল। এছাড়া শুকনো খাবার ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট সরবরাহ করা হচ্ছে। এ মুহূর্তে সেনাবাহিনী মাঠপর্যায়ে রয়েছে, তাই যেকোনো পরিস্থিতিতে তারাও সহযোগিতা করতে পারবে। জনসাধারণকে আশ্রয় কেন্দ্রে নিতে স্বেচ্ছাসেবকরা কাজ করছেন বলে জানান তিনি।

বরিশাল আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক প্রণব কুমার রায় বলেন, ঘূর্ণিঝড় দানা এখন উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে রয়েছে। তবে এই ঘূর্ণিঝড় বাংলাদেশের সমতলে আসার কোনো আশঙ্কা নেই। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে বা শুক্রবার সকালে ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গে আঘাত হানতে পারে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। মাঝে মাঝে ঘন্টায় ৪০-৪৫ নটিক্যাল মাইল গতিতে দমকা হওয়া বইছে।

বরিশাল নৌবন্দর কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক জানান, ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে বৃষ্টি ও দমকা বাতাসের কারণে বরিশাল থেকে অবভ্যন্তরীণ রুটে এক তলা বিশিষ্ট লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত